Monday 11 June 2018

“রাহু সূর্য্য-চন্দ্র কে খেয়ে ফেলে এই সম্পর্কিত অভিযোগের খন্ডন”

ॐ 卐 




  » কিছু পূরাণ এবং অন্যান্য কিছু ক্ষেত্রে এই "তথ্য" পাওয়া যায় যে রাহু সূর্য্য-চন্দ্র কে খেয়ে নেয় কিন্তু যারা অপপ্রচার করে তারা শুধু তথ্যটাকে উপস্থাপন করে, যে "তত্ত্ব" বর্ণিত হয়েছে, তা জানার ও বোঝার প্রয়োজন ই বোধ করে না ।তথ্য টুকু জেনে মূল তত্ত্ব না  বুঝে এরা চলে আসে ফেসবুকে আর্টিকেল লিখতে । তাই এদের অবস্থা হয় বইয়ের ৩ পাতা পড়া শিক্ষকের মত ।।
সূর্যগ্রহণ ও চন্দ্রগ্রহণ এর বৈজ্ঞানিক সংজ্ঞা ।





» সূর্যগ্রহন : চাঁদ যখন পরিভ্রমণরত অবস্থায় কিছু সময়ের জন্য পৃথিবী ও সূর্যের মাঝখানে এসে পড়ে, তখন পৃথিবীর কোন দর্শকের কাছে সূর্য আংশিক বা সম্পূর্ণরূপে অদৃশ্য হয়ে যায় (কিছু সময়ের জন্য)। এই ঘটনাকে সূর্যগ্রহণ বলা হয়। অমাবস্যার পরে নতুন চাঁদ উঠার সময় এ ঘটনা বেশি ঘটে। ইংরেজীতে একে Solar eclipse বলে।






» চন্দ্রগ্রহন : পৃথিবী তার পরিভ্রমণ অবস্থায় চাঁদ ও সূর্যের মাঝখানে এলে কিছু সময়ের জন্য পৃথিবী, চাঁদ
ও সূর্য একই সরল রেখায় অবস্থান করতে থাকে। তখন পৃথিবী পৃষ্ঠের মানুষ/প্রাণীদের থেকে চাঁদ কিছু সময়ের জন্য অদৃশ্য হয়ে যায়। এটাকে চন্দ্রগ্রহণ বলে । ইংরেজীতে Lunar eclipse বলে।
অর্থাৎ সূর্যগ্রহণে চাঁদের ছায়া পৃথিবীর উপরে পড়ে এবং চন্দ্রগ্রহণে পৃথিবীর ছায়া চাঁদের উপর পড়ে ।।

এখন এই রাহুর পরিচয় জানা যাক জ্যোতিষ শাস্ত্র তে।





 জ্যোতিষ অনুসারে, রাহু, সূর্য এবং চন্দ্ৰের পরিক্রমণ পথে ঘুরতে থাকা দুটি বিন্দু যারা পৃথিবীর সাপেক্ষে একে অপরের বিপরীত দিকে (১৮০ ডিগ্রী) অবস্থিত। এই গ্রহদুটি যেহেতু কোন মহাজাগতিক বস্তু নয়, তাই একে ছায়া গ্রহ বলা হয় ।।

সাধুসঙ্কলিনী তন্ত্রে রাহুর সূর্য্য গ্রাস তত্ত্ব বর্ণন 




সর্বগ্রহাণাং তেজস্বী সবিতা বীরবন্দিতে । শক্তস্তমাচ্ছাদয়িতুং যঃ স রাহুর্মহাবলঃ ।।৩।।
অর্থ- সর্বশক্তিমান মহাতেজস্বী সূর্য্য হলো মহাবীর, এই রাহু কিছু সময়ের জন্য সূর্য্য কে শক্ত রুপে আচ্ছাদন করে ।।


সাম্ব পূরাণ এ রাহুর সূর্য্য-চন্দ্র গ্রাস সম্পর্কিত তত্ত্ব বর্ণন ।। 



সাম্ব পূরাণ এর ২৩/১৭ তে স্পষ্ট বলা আছে অন্ধকারময় অম্লাকার ( বাষ্পাকার ) রাহু পার্থিব ছায়া উদ্ধৃত করে,  সেই ছায়ায় চন্দ্র কে আচ্ছন্ন করে  এবং  চন্দ্রগ্রহণ হয় ।। 



সাম্ব পূরাণ এ ২৩/৩৩-৩৪ এ বলা হয়েছে, মেঘ যেমন চন্দ্র সূর্য কে আচ্ছন্ন করে , ঠিক সেই রুপ রাহু ও চন্দ্র-সূর্য্য কে "আচ্ছন্ন" করে ।। পৃথিবীর ছায়া আচ্ছন্ন করে ধূমময় মেঘের মত রাহু উত্থিত হয় ।। বস্তুতঃ রাহু সূর্য্য-চন্দ্র কে স্পর্শ ও করে না ।।




সাম্ব পূরাণ এর ২৩/৩৮-৩৯ এ বলেই দেওয়া আছে,  এরুপ ভাবে রাহু সূর্য্য-চন্দ্র কে গ্রহণ করে ।। চর্মচক্ষু বিশিষ্ট "অবোধ" মানুষ রা এই ঘটনাকে সূর্য্য-চন্দ্র "গ্রহণ" বলে মনে করে এবং সমস্ত জগত সম্মোহিত হয় ।।

 উপসংংহার :-- রাহু কোনো মহাজাগতিক বস্তু না ।। ইহা হল বাস্তবে এক ছায়া গ্রহ এবং ছায়াময় এক শক্তি , যে নিজের ছায়া দ্বারা সূর্য্য-চন্দ্র কে কিছুসময়ের জন্য "আচ্ছন্ন"  করে, কখনোই রাহু সূর্য্য-চন্দ্র কে খেয়ে ফেলে না এবং এই ঘটনার বা বর্ণনার সাথে বিজ্ঞানের কোনও বৈজ্ঞানিক বিরোধীতা নেই এবং এই ঘটনা তথা পৌরাণিক বর্ণনা সম্পূূর্ণভাবে যুুুুক্তিসম্মত ।।



                 WRITER - ARYA RISHI 

No comments:

Post a Comment

“ড. শিব শক্তি নামক কাল্পনিক চরিত্র ! একটি ইসলামিক তাকিয়ার নমুনা”

                                ॐ    “ সম্মানিত পাঠক গণ আপনারা হয়তো অনলাইনে বহু ইসলামিক গ্রুপ , পেজ এসব স্থানে এই শিবশক্তি সরূপজী...

সব্বোর্চবার পঠিত